বাংলাদেশের জনপ্রিয় ফ্যাশন মডেল তারকা চন্দন মজুমদার। ৩৩ বছরের এই মডেল তারকা আজও যেন একজন সদ্য যুবক। আমাদের প্রতিবেদককে জানিয়েছেন তার খুব সুন্দর চুল ও রুপের রহস্য। তিনি মনে করেন- প্রতিটি মানুষেরই নিজেকে ভালোবাসার অধিকার থাকা উচিৎ সবার আগে। শুধু মডেল কিংবা মিডিয়ার শিল্পিরা নিজেদের যত্ন নিবেন এটা নয়। সবারই উচিৎ নিজেকে ভালোবাসার। নিজেদের জন্য একান্ত কিছুটা সময় বের করার। তবেই নিজেকে সতেজ, প্রানবন্ত ও চির সবুজ রাখা সম্ভব। আর নিজেকে ভালোবাসার মধ্যে সঠিক ভাবে নিয়মিত চুল ও ত্বকের যত্ন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
যেভাবে চুলের যত্ন নেনঃ
১। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার - সমপরিমাণ জলপাই তেল ও নারকেল তেল (হালকা কুসুম গরম করে), ১চা চামচ মধু, ২টা ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভালো করে মিশিয়ে মাথার স্কাল্পে সহ পুরো চুলে লাগিয়ে ৫মিনিট আলতো করে মাসাজ করে নিয়ে একটি তোয়ালে ফুটন্ত পানিতে গরম করে পেচিয়ে রাখেন ২০-৩০ মিনিট। অতপর শাম্পু করে প্রথমে কন্ডিশনার ও পরে নিউট্রিশান ব্যবহার করেন। (তিনি "লরিয়াল" কিংবা "ট্রেসিমি" ব্র্যান্ডের শাম্পু ও কন্ডিশনার এবং "ফ্রাঙ্ক প্রভোস্ট" ব্র্যান্ডের নিউট্রিশান ব্যবহার করেন।) জরুরি প্রয়োজন না পরলে স্বাভাবিক ভাবেই চুল শুকিয়ে নেন, নাহলে ব্লো-ড্রাই মেশিন ব্যবহার করেন। সব শেষে তিনি "অসিস প্লাস" ব্র্যান্ডের হেয়ার সিরাম চুলে লাগান।
তিনি প্রায় প্রতিদিনই হার্ড হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করে থাকেন। তার চুলে রয়েছে হাইলাইটস করা রঙ। আর শুটিং এর প্রয়োজনে হেয়ার আয়রন/ কার্ল মেশিন সহ অনেক কিছুই ব্যবহার করতে হয় তাকে, তাই তার চুলের রুক্ষতা কমাতে বছরে ১-২ বার কেরাটিন স্মুথ ট্রিটমেন্ট করান। খুব বেশী প্রয়োজন নাহলে তিনি হেয়ার আয়রন কিংবা ব্লো-ড্রাই মেশিন ব্যবহার করেন না। আর এগুলো ব্যবহার করার পূর্বে তিনি হেয়ার হিট প্রটেক্টর স্প্রে করে নেন। তবে চুলের স্টাইল করতে তিনি নিয়মিত হেয়ার স্প্রে কিংবা ওয়াক্স ব্যবহার করেন। হেয়ার জেল তিনি একেবারেই ব্যবহার করেন না। তার মতে চুল পড়ার সব থেকে বড় কারন হেয়ার জেল! হেয়ার স্প্রে কিংবা ওয়াক্স খুব পাতলা হওয়ায় সেটা শুধু চুলেই থাকে, হেয়ার জেল কিছুটা ভারি হওয়ায় কিংবা গরমে বেয়ে বেয়ে চুলের স্কাল্পে লেগে যায়। আর সেটার জন্যই চুল পড়ে থাকে। তাই তিনি হেয়ার জেল ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন।
যেভাবে ত্বকের যত্ন নেনঃ
এই মডেল তার ত্বকের থেকে চুলের পিছনেই বেশী সময় দেন। শুটিং এর কারনে মেকআপের দরকার হয় দেখেই, যা-একটু টুকটাক স্বাভাবিক যত্ন নেন। সব থেকে মজার ব্যাপার হল তিনি ফেসওয়াসও ব্যবহার করেননা! তার মুখ সবসময় এমন প্রানবন্ত ও সতেজ থাকার সবথেকে বড় উপকরন হল- শসা কিংবা বরফ!
১। তিনি প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১-২ স্লাইস শসা কিংবা বরফ নিয়ে সারা মুখে হালকা মাসাজ করে স্বাভাবিক ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলেন।
২। সপ্তাহে ১ দিন কিংবা শুটিং থেকে বাসায় ফিরে তিনি একটা ছোট ফেস প্যাক বানান। ১চা চামচ কফি, ১চা চামচ মধু আর ভিটামিন ই ক্যাপসুল ১-২টা দিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে ২-৩ মিনিট ভালো করে মুখে মাসাজ করে শসা দিয়ে মুখ আরেক দফা ১ মিনিটের মত মাসাজ করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলেন।
এই মডেল শুটিং এর সময়েও খুব হালকা মেকআপ ব্যবহার করে থাকেন। আর যত দ্রুত সম্ভব শুটিং শেষে মেকআপ উঠিয়ে ফেলেন।
সর্বোপরি তিনি তার ভক্তদেরকে- যতটা সম্ভব বেশী করে বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দেন। তিনি জানান- পানি হচ্ছে সবথেকে বড় ওষুধ। তিনি নিজেও সারা দিনে প্রচুর পানি পান করেন। তার মতে সবার আগে শরীরের ভিতর থেকে নিজেকে হাইড্রেড রাখতে হবে। তারপরে বাকি চর্চা। সুন্দর চুল ও ত্বকের জন্য পানির গুরুত্ত অপরিসীম। তিনি তার ভক্তদের চুল ও ত্বকের জন্য অন্তত সপ্তাহে একদিন যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন। চুলে বেশী কিছু সম্ভব না হলেও তেল মাসাজ করার কথা জোর দিয়ে বলেন তিনি। তবে তেলটা হালকা গরম করে নিয়ে নিলে বেশী কার্যকর হবে। যাদের চুল পড়ার সমস্যা আছে, তাদের তিনি একেবারেই কন্ডিশনার সহ যাবতীয় সব ধরনের স্টাইলিশ পণ্য ব্যবহার না করার ও হারবাল শাম্পু ব্যবহার পরামর্শ দেন। আর মুখে যতটা সম্ভব কম জিনিস / কসমেটিক্স ব্যবহার করতে হবে। তবেই মুখের ত্বক থাকবে পরিষ্কার ও দাগহীন। আর অবশ্যই ব্রান্ডেড ও নিজের চুল ও ত্বকের সাথে মানানসই পণ্য ব্যবহার করতে হবে। রঙ / হাইলাইটস কিংবা রিবন্ডীং করা চুলে অবশ্যই ভালো মত করে যত্ন নিতে হবে। প্রয়োজনে গুগুল/ইউটিউব থেকে আরও ভালো টিপস নিয়ে কিংবা সরাসরি হেয়ার এক্সপার্ট কিংবা ডারমাটোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। মোটকথা নিজের যত্ন যতদিন নেওয়া যাবে, ততদিনই যৌবন ধরে রাখা সম্ভব বলে জানান তিনি। আর বয়সটাকে শুধু মাত্র একটি সংখা মনে করতে হবে। প্রতিবেদনঃ তারেক রাহমান , বিডিমডেলনিউজ, ঢাকা।
No comments:
Post a Comment